লেজার কতটা নিরাপদ
বর্তমান সময়ে অনেকেই
বিভিন্ন ডার্মাটোলজিক্যাল সমস্যার সমাধানে প্রথাগত সার্জারির পরিবর্তে লেজার
ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করছেন । কিন্তু তারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চিন্তায় ভীত হয়ে
পড়েন এবং অনেকেই ভাবেন যে লেজার ব্যবহারের ফলে স্কিন ক্যান্সার হতে পারে । এখন
মানুষ সান ড্যামেজ, মুখের বলিরেখা, অযাচিত চুল, ট্যাটু, দাগ, ব্রণ অপসারণে লেজার
ব্যবহার করে থাকেন ।
সান ড্যামেজের
চিকিৎসায় লেজার খুব কার্যকরী । লেজার বিশেষভাবে চামড়ার নির্দিষ্ট বিন্দুতে লক্ষ্য
করে । চামড়ার ব্রাউন স্পট দূর করতে সাধারণত পিগমেন্ট স্পেসিফিক লেজার (কিউএস রুবি,
কিউএস এনডি-ওয়াইএজি এবং কিউএস আলেক্সানড্রাইট) ব্যবহার করা হয় । এসব লেজার লাইটের
শক্তি চামড়ার সমতলে কাজ করে । এরা কখনই কোন রকমের ডিএনএ ড্যামেজ ঘটায় না এবং ডিএনএ
মিউটেশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায় না । তাই লেজার চিকিৎসায় স্কিন ক্যান্সারের কোন
সম্ভাবনাই থাকে না ।
মুখের বলিরেখা
দূরীকরণেও লেজার খুব কার্যকর । এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত লেজারগুলো অ্যাবিলিটিভ
(এটি চামড়ার উপরের
লেয়ারকে বাষ্পীভূত করে-যেমন, কার্বন ডাই অক্সাইড অথবা এরিবিয়াম লেজার) অথবা
ননঅ্যাবিলিটিভ লেজার ( যা একটি রিসারফেসিং লেজার যা চামড়া না ছাড়িয়েই বলিরেখা দূর
করে) । মুখের বলিরেখা দূর করতে বহু দশক ধরে লেজার ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এখন
পর্যন্ত লেজার ব্যবহারের সাথে স্কিন ক্যান্সারের কোন যোগাযোগ পাওয়া যায় নি ।
অযাচিত চুল অপসারণে
তীব্র আলোর বিম ব্যবহার করে হয় এবং এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ফটোথার্মলাইসিস । লেজারের
তাপ পিগমেন্ট অথবা চুলের মূলের মেলানিন দ্বারা শোষিত হয় যার ফলে ফলিসাইল ড্যামেজ
হয় এবং পরবর্তীতে চুলের বিকাশ বন্ধ হয় । মেলানিন যত বেশি অর্থাৎ চুল যত কালো হয় তত
বেশি আলো শোষিত হয় এবং তত বেশি চুল অপসারণ কার্যকর হয় । সাধারণত, সাদা চুল বা ধূসর
চুলের ক্ষেত্রে লেজার হেয়ার রিমুভাল খুব বেশি কার্যকর হয় না কারণ আলো শোষণ করবার
মত অল্প মেলালিন সেখানে উপস্থিত থাকে । অসংখ্য মানুষ লেজার হেয়ার রিমুভাল
ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করেছেন । যদিও কারও কারও ক্ষেত্রে অস্থায়ী ফোসকা, ইনফেকশন অথবা
চামড়ার রঙ পরিবর্তন হওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় । যা কিনা উপযুক্ত চিকিৎসার
মাধ্যমে অল্প দিনের মধ্যেই সেরে উঠে । কিন্তু কখনই এর ফলে কোন ধরনের ক্যান্সার হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে না ।
উপরোক্ত কোন লেজারই
ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে না । বরং প্রি-ক্যান্সারাস লেসিওন চিকিৎসায়
কিছু লেজার বেশ কার্যকর । ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় লেজার থেরাপি
তীব্র আলো ব্যবহার করে । লেজার টিউমার ধ্বংস, সংকুচিত করতে পারে অথবা
প্রি-ক্যান্সারাস বৃদ্ধি রোধ করতে পারে । সাধারণত সুপারফিসিয়াল ক্যান্সার (যেমন-
বাসেল সেল, সারভিক্যাল, পেনাইল, ভ্যাজাইনাল, ভালভার, নন স্মল সেল লাং ক্যান্সার)
চিকিৎসায় লেজার বেশি ব্যবহৃত হয় ।
শুধু মাত্র লেজারই
ব্যবহার করা যায় কিন্তু সাধারণত এর পাশাপাশি সার্জারি, কেমোথেরাপি অথবা রেডিয়েশন
থেরাপিও ব্যবহার করা হয় । সার্জারি পরবর্তী ব্যাথা কমানোর জন্য এবং টিঊমার সেল
যাতে আরও ছড়িয়ে না পরতে পারে তার বিরুদ্ধে লেজার ট্রিটমেন্ট কার্যকরী ভূমিকা পালন
করতে পারে । **
সর্বোপরি,
চিকিৎসাশাস্ত্রে এমন কোন প্রমাণ বা রিপোর্ট পাওয়া যায়নি যে লেজার ট্রিটমেন্টের ফলে
স্কিন ক্যান্সার বা কোন রকমের ক্যান্সার হতে পারে । যদিও লেজার থেরাপির পর বেশ
কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা কিনা উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে
খুব সহজেই সারিয়ে নেয়া যায় ।
**তথ্যসূত্রঃ
https://www.cancer.gov/about-cancer/treatment/types/surgery/lasers-fact-sheet
No comments:
Post a Comment