বছরের এ সময় বাতাস শুষ্ক হয়ে যায় । সব কিছুই শুষ্ক হতে শুরু করে । ত্বক
শুষ্ক হতে থাকে এবং খসখসে হয়ে যায় । কিন্তু পানি এর সমাধানে এবং ত্বক সংক্রান্ত
অন্যান্য সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে । পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি
পান ও ব্যবহার সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ । কারণ পানি হজম, রক্ত
সঞ্চালন, শোষণ, এমনকি রেচনে সাহায্য করে । কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে যে বেশি
পরিমাণে পানি পান ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে পারে কি না? এমন অনেক দাবি রয়েছে
যে পানি পানের ফলে ত্বক উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যবান, তারুণ্যদীপ্ত হয় । অপরদিকে এমন
দাবিও আছে যে ত্বকের উপর এর কোন প্রভাবই নেই ।
প্রকৃত অর্থে ত্বক হচ্ছে একটি অঙ্গ এবং শরীরের অন্যসব অংশের মত এটিও কোষ
দিয়ে তৈরি । আর শরীরের অন্য সব কোষের মতই ত্বক কোষ পানি দিয়েই তৈরি। ফলে ত্বক বা
অনন্য কোন অঙ্গ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ছাড়া
ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না ।
যদি আপনার ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির সরবরাহ না থাকে, তবে তা শুকিয়ে যাবে
। এর ফলে আপনার ত্বক ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাবে এবং টানটান ভাব দেখা দেবে । শুষ্ক ত্বকের
স্থিতিস্থাপকতা কম হওয়ায় ভঙ্গুর হয় এবং তাতে করে বলি রেখা পড়ার প্রবণতা বাড়ে ।
তাছাড়া ত্বকে তেলের তুলনায় পানি কমে গিয়ে ত্বকের উপর ভারী তেলের প্রলেপ পরলে
ব্রণের ব্রেকআউট হয় । এখেত্রে পানির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
প্রতিদিন শরীর থেকে আমরা বড় অংশের পানি হারাই । আর ডিহাইড্রেশন আমাদের
ত্বককে শুষ্ক করে দেয় । দুর্ভাগ্যক্রমে শরীরের অন্য সকল অঙ্গে পানি পৌঁছাবার পর
ত্বকে পানি পৌঁছে । তাই ত্বকে পানি প্রয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ । তাতে ত্বকে বলিরেখা
বা ব্রণ হবার প্রবণতাও কমে । পানি পান করতে হবে । এর ফলে ত্বক ও শরীর টক্সিন
পরিস্কার করে ফেলতে পারবে । এর জন্য দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত । পানির
ব্যবহার এবং পানের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথেই হয়তো ত্বকের কোন আমূল পরিবর্তন আসবে
না, কিন্তু এতে কোন ক্ষতিও হচ্ছে না ।
সানস্ক্রিন ব্যবহারের পাশাপাশি ত্বকের যত্নের আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে ত্বক
পরিষ্কার রাখা । নিয়মিত ময়েশ্চারাইজেশন ও
হাইড্রেশনে নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান ত্বক এবং সর্বোপরি সুস্বাস্থ্য
নিশ্চিত হয় । বাইরের পরিবেশ থেকে ত্বকই হচ্ছে আমাদের প্রথম সুরক্ষা ব্যবস্থা । তাই
আমাদের শরীর কিভাবে ত্বকের স্বাস্থ্যের উপর অনেকটাই নির্ভর করে । ত্বকের অবস্থা
দেখেও শরীরের অভ্যন্তরীণ অলক্ষিত রোগের আভাস পাওয়া যায় । এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাই
হচ্ছে প্রথম প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা ।
রাত্রিকালীন পরিষ্কারের ফলে ব্রণ ও ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ হয় । মেকাআপ
এবং ডেড স্কিন সেলসহ ঘুমালে ব্রণের প্রবণতা বাড়তে পারে । বয়সের সাথে সাথে আমরা
কোলাজেন হারাতে থাকি, ব্রণের আকার সহজে কমে না বরং বড় আকারেই থাকে । হাইড্রেশন
প্রসঙ্গে, রাতে ত্বকের তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে বাস্পীভবন ঘটে । আর পরিষ্কারের
পর ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগের মাধ্যমে ত্বকের হাইড্রেশন নিশ্চিত করা যায় । রাতের মত
সকালেও ত্বক পরিষ্কার করা সমান গুরুত্বপূর্ণ । কারণ রাতে ত্বক কোষের পুনরুৎপাদন ও
ক্ষতিপূরণ হয় । সকালে তাই ত্বকে অধিক পরিমাণে সিবাম এবং ডেড স্কিন সেল উপস্থিত
থাকে । রাত বা সকালে ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে শুধু পানি কখনই যথেষ্ট নয় । শুধু
পানি ৬৫% পর্যন্ত ত্বক পরিষ্কার করতে পারে । প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সিরাম এবং
ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ একটি উপযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহারের ফলে লাভবান হওয়া যায় ।
ফেসিয়ালের ডিপ ক্লিনজিং বৈশিষ্ট্য ত্বকের লেয়ারগুলোর মধ্যে সঞ্চালন বৃদ্ধি
করে । যার ফলে রক্তের মধ্যে উপস্থিত পুষ্টি নতুন স্কিন সেল তৈরি করতে পারে । সকাল
এবং রাতে ত্বক পরিষ্কার করা হচ্ছে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করার সবচেয়ে সহজ অথচ
ক্রিটিকাল প্রথম পদক্ষেপ । সর্বোপরি, রাতে ভাল ঘুমের অভ্যাসের পাশাপাশি ত্বকের
হাইড্রেশন, নিয়মিত সান স্ক্রিনের ব্যবহার ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে ।
No comments:
Post a Comment