Saturday 19 November 2016

ত্বকের জত্নে পানির গুরুত্ব


বছরের এ সময় বাতাস শুষ্ক হয়ে যায় । সব কিছুই শুষ্ক হতে শুরু করে । ত্বক শুষ্ক হতে থাকে এবং খসখসে হয়ে যায় । কিন্তু পানি এর সমাধানে এবং ত্বক সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে । পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান ও ব্যবহার সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ । কারণ পানি হজম, রক্ত সঞ্চালন, শোষণ, এমনকি রেচনে সাহায্য করে । কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে যে বেশি পরিমাণে পানি পান ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে পারে কি না? এমন অনেক দাবি রয়েছে যে পানি পানের ফলে ত্বক উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যবান, তারুণ্যদীপ্ত হয় । অপরদিকে এমন দাবিও আছে যে ত্বকের উপর এর কোন প্রভাবই নেই ।

প্রকৃত অর্থে ত্বক হচ্ছে একটি অঙ্গ এবং শরীরের অন্যসব অংশের মত এটিও কোষ দিয়ে তৈরি । আর শরীরের অন্য সব কোষের মতই ত্বক কোষ পানি দিয়েই তৈরি। ফলে ত্বক বা অনন্য কোন অঙ্গ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ছাড়া  ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না ।
যদি আপনার ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির সরবরাহ না থাকে, তবে তা শুকিয়ে যাবে । এর ফলে আপনার ত্বক ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাবে এবং টানটান ভাব দেখা দেবে । শুষ্ক ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কম হওয়ায় ভঙ্গুর হয় এবং তাতে করে বলি রেখা পড়ার প্রবণতা বাড়ে । তাছাড়া ত্বকে তেলের তুলনায় পানি কমে গিয়ে ত্বকের উপর ভারী তেলের প্রলেপ পরলে ব্রণের ব্রেকআউট হয় । এখেত্রে পানির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।


প্রতিদিন শরীর থেকে আমরা বড় অংশের পানি হারাই । আর ডিহাইড্রেশন আমাদের ত্বককে শুষ্ক করে দেয় । দুর্ভাগ্যক্রমে শরীরের অন্য সকল অঙ্গে পানি পৌঁছাবার পর ত্বকে পানি পৌঁছে । তাই ত্বকে পানি প্রয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ । তাতে ত্বকে বলিরেখা বা ব্রণ হবার প্রবণতাও কমে । পানি পান করতে হবে । এর ফলে ত্বক ও শরীর টক্সিন পরিস্কার করে ফেলতে পারবে । এর জন্য দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত । পানির ব্যবহার এবং পানের পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথেই হয়তো ত্বকের কোন আমূল পরিবর্তন আসবে না, কিন্তু এতে কোন ক্ষতিও হচ্ছে না ।
সানস্ক্রিন ব্যবহারের পাশাপাশি ত্বকের যত্নের আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে ত্বক পরিষ্কার রাখা । নিয়মিত  ময়েশ্চারাইজেশন ও হাইড্রেশনে নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান ত্বক এবং সর্বোপরি সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় । বাইরের পরিবেশ থেকে ত্বকই হচ্ছে আমাদের প্রথম সুরক্ষা ব্যবস্থা । তাই আমাদের শরীর কিভাবে ত্বকের স্বাস্থ্যের উপর অনেকটাই নির্ভর করে । ত্বকের অবস্থা দেখেও শরীরের অভ্যন্তরীণ অলক্ষিত রোগের আভাস পাওয়া যায় । এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাই হচ্ছে প্রথম প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা ।

রাত্রিকালীন পরিষ্কারের ফলে ব্রণ ও ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ হয় । মেকাআপ এবং ডেড স্কিন সেলসহ ঘুমালে ব্রণের প্রবণতা বাড়তে পারে । বয়সের সাথে সাথে আমরা কোলাজেন হারাতে থাকি, ব্রণের আকার সহজে কমে না বরং বড় আকারেই থাকে । হাইড্রেশন প্রসঙ্গে, রাতে ত্বকের তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে বাস্পীভবন ঘটে । আর পরিষ্কারের পর ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগের মাধ্যমে ত্বকের হাইড্রেশন নিশ্চিত করা যায় । রাতের মত সকালেও ত্বক পরিষ্কার করা সমান গুরুত্বপূর্ণ । কারণ রাতে ত্বক কোষের পুনরুৎপাদন ও ক্ষতিপূরণ হয় । সকালে তাই ত্বকে অধিক পরিমাণে সিবাম এবং ডেড স্কিন সেল উপস্থিত থাকে । রাত বা সকালে ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে শুধু পানি কখনই যথেষ্ট নয় । শুধু পানি ৬৫% পর্যন্ত ত্বক পরিষ্কার করতে পারে । প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সিরাম এবং ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ একটি উপযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহারের ফলে লাভবান হওয়া যায় ।

ফেসিয়ালের ডিপ ক্লিনজিং বৈশিষ্ট্য ত্বকের লেয়ারগুলোর মধ্যে সঞ্চালন বৃদ্ধি করে । যার ফলে রক্তের মধ্যে উপস্থিত পুষ্টি নতুন স্কিন সেল তৈরি করতে পারে । সকাল এবং রাতে ত্বক পরিষ্কার করা হচ্ছে ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করার সবচেয়ে সহজ অথচ ক্রিটিকাল প্রথম পদক্ষেপ । সর্বোপরি, রাতে ভাল ঘুমের অভ্যাসের পাশাপাশি ত্বকের হাইড্রেশন, নিয়মিত সান স্ক্রিনের ব্যবহার ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে ।

No comments:

Post a Comment