দক্ষিণ এশিয়ার বাকি
সবার মতই বাংলাদেশীদের ত্বকর ধরণ হয়ে থাকে । তবে বাংলাদেশীদের ব্যাপারে
ডার্মাটোলজিস্টদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ইতিহাসের কথা মাথা রাখতে হয় ।
বাংলাদেশের রয়েছে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ইতিহাস, মূল আদিবাসী ছাড়াও বিভিন্ন জাতির
মানুষ এসেছে এ দেশে । এক্ষেত্রে পার্সিয়া, আরব দেশ সমূহ, গ্রীস এবং পরবর্তীতে ইউরপিয়ান
কলোনির প্রভাব এখানে দেখা যায় ।
এটা কোন ব্যাপার না যে
আমরা এসিয়ান, আফ্রিকান, নেটিভ আমেরিকান বা ল্যাটিন বংশোদ্ভূত, আমাদের মধ্যে অন্তত
দুটি ব্যাপার খুবি সাধারণ । প্রথমত, আমাদের চমৎকার বাদামী ত্বক । দ্বিতীয়ত, অত্যাধুনিক জেনেটিক পরীক্ষার
দ্বারা আবিষ্কৃত, যে আমরা সবাই আফ্রিকার এক নারী ও পুরুষ থেকে সম্ভূত । এরাই
সম্ভবত জ্ঞাত মানুষ যারা খুব সম্ভবত বাদামী ত্বকের অধিকারী ছিলেন, যারা আফ্রিকান
মহাদেশ (সুদান, ইথিওপিয়া, মালি) জুড়ে ভ্রমণ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং জাপান
মধ্যে অভিবাসিত হন, তারপর অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি, এবং মধ্য এশিয়া পরে ইউরোপ এবং
আমেরিকা মধ্যে ছড়িয়ে পড়েন ।
বাংলাদেশি জনসংখ্যার উৎপত্তি এবং
ত্বকের রঙ পরিপ্রেক্ষিতে খুব বৈচিত্র্যময় এবং ত্বকর রঙ গাঢ় বাদামী থেকে হালকা বাদামী হয়ে থাকে । তবে কেন সবার
বাদামী ত্বক হয় না? নৃবিজ্ঞানীদের মতে এ ধনের বৈচিত্র দেখা দিয়েছে প্রাকৃতিক
নির্বাচনের ফলে, যা কিনা দেখা দিয়েছে প্রাথমিক মানুষের নির্দিষ্ট পরিবেশে
অভিবাসনের পর পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়ার প্রবণতা থেকে । উদাহারণসরূপ, গাঢ় পিগমেন্টের বাদামী ত্বকের রঙ দেখা যায় মেলানিন
নামক একটি পিগমেন্টের উপস্থিতির কারণে । একটি সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে
রক্ষা করে । উচ্চ মেলানিন দেয় উন্নত ফটোপ্রোটেকশন এবং ফটোড্যামজের হাত থেকেও
বাঁচায় । আর মেলানিন সমৃদ্ধ ত্বকের অধিকারীদের ত্বকে বয়সের লক্ষণ
ধীরে প্রকাশ প্রায় ।
প্রচলিত সমস্যা সমূহ
হাইপারপিগমেন্টেশন এবং চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল বেশিরভাগ বাংলাদেশীদের জন্য
একটি উদ্বেগের ব্যাপার । এমনকি তুলনামূলক উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারীদেরও
পোস্টইনফ্লেমেটরি হাইপারপিগমেন্টেশনে ভুগতে হয় । এছাড়া ধূসর ডার্মাটোসিসও দেখা যায়
।
ব্রণের দাগজনিত সমস্যা
দক্ষিণ এশিয় রোগীদের ব্রণের দাগের চিকিৎসার
ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন পিগমেন্টারি ইস্যু দেখা দিত পারে । এক্ষেত্রে
সমাধান হিসেবে কেমিক্যাল পিল (খোসা), মেকানিক্যাল আব্রেশন এবং এমনকি ফিলার এজেন্ট
ব্যবহার করা যেতে পারে । যেকোনো আঘাতের ক্ষেত্রে ত্বক অত্যধিক সংবেদনশীল আচরণ করে
।
চোখের ডার্ক সার্কেল
বাংলাদেশীদের চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল
হওয়ার প্রবণতার পিছনে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কারণ থাকতে পারে । কিন্তু প্রকৃত গবেষণা না
থাকায় এসবই আসলে কেবল জল্পনা । চোখের ডার্ক সার্কেলের বেশিরভাগ চিকিৎসাই হতাশাজনক
ফল নিয়ে আসে । তবে কিউ-সুইচড আলেক্সানড্রাইট লেজার ব্যবহারের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত
ফলাফল অর্জন সম্ভব । আর পিগমেন্টারি উন্নতির জন্য ফ্রাক্সেল (প্রেলিয়ান্ট) লেজার
বেশ কার্যকর ।
তবে এসব সমস্যার চিকিৎসার ক্ষেত্রে
এনার্জি লেভেল কমিয়ে রাখা ভাল ।
অতিরিক্ত চুল
বাংলাদেশীদের ত্বক সাধারণত পুরু হয় । আমাদের এই পুরু ত্বকের কারণে বেশি সংখ্যক হেয়ার ফলিসিল দেখা যায় । এ থেকেই বোঝা যায় দক্ষিণ এশিয়দের কেন অতিরিক্ত চুল নিয়ে সমস্যায় পরতে হয় । অয়াক্সিং জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে এবং এর ফলে হাইপারপিগমেন্টেশনও দেখা দিতে পারে । দীর্ঘস্থায়ীভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত চুল অপসারণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হচ্ছে লেজার হেয়ার রিমুভাল । অনেকেই জানতে চান যে বাংলাদেশীদের জন্য হেয়ার রিমুভালের সবচেয়ে কার্যকর লেজার কোনটি । মেলানিন সমৃদ্ধ ত্বকের ক্ষেত্রে এনডিঃওয়াইএজি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি কার্যকর লেজার । এক্ষেত্রে ১০-১২টি লেজার সেসন লাগতে পারে ।
তবে বাংলাদেশীদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলার
ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নিতে হয় । আর প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এদেশের
মানুষের ত্বকের চিকিৎসার জন্য লেজার এখন একটি নিরাপদ সমাধান হিসেবে অগ্রগণ্য ।
No comments:
Post a Comment