স্কিন ক্যান্সার হচ্ছে স্কিন সেলের অনিয়ন্ত্রিত এবং অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যা স্কিন সেলের ডিএনএ ড্যামেজের কারণে হয়ে থাকে । সাধারণত সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি এবং ট্যানিং বেডের কারণে ডিএনএ ড্যামেজ হয় । যার ফলে মিউটেশন বা দেখা দেয় এবং স্কিন সেল দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে এবং মলিগ্নান্ট টিউমার গঠন করে । প্রধানত যে তিনটি বিশেষ ধরণের স্কিন ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে তারা হলো বাসেল সেল কারসিনোমা, স্কোয়েমাস সেল কারসিনোমা এবং মেলানোমা । এদের প্রত্যেকের নামকরণ করা হয়েছে যে বিশেষ সেল থেকে উৎপত্তি নেয় তার উপর ভিত্তি করে ।
সাধারণ কারণ সমূহ
·
ফর্সা ত্বক
·
সূর্যকরোজ্জ্বল অথবা উচ্চতাসম্পন্ন জলবায়ু
·
বহু অস্বাভাবিক তিল
·
প্রাক-ক্যান্সার লেসিওনের
উপস্থিতি
·
বিকিরণে আক্রান্ত হওয়া
অথবা বিশেষ কিছু পদার্থ- যেমন আর্সেনিক
·
বংশগতি
·
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাসেল সেল কারসিনোমা
স্কিন ক্যান্সারের ভিতরে
এটি সবচেয়ে বেশি হতে দেখা যায় । সৌভাগ্যবশত এটি খুব বিপদজনক নয় । কিন্তু অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হয় । না হয় এটি বৃদ্ধি পেতে থাকে, পার্শ্ববর্তী
স্কিন টিস্যুকে আক্রান্ত করে এবং ধ্বংস করে ফেলে । সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিই এর মূল
কারণ । ঘন ঘন সান বার্ন এবং শৈশবে তীব্র সূর্যের আলোয় বেশি থাকলে প্রাপ্ত বয়সে বাসেল
সেল স্কিন ক্যান্সার হতে পারে ।
স্কোয়েমাস সেল স্কিন ক্যান্সার
এর চিকিৎসা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করতে হয় কারণ ক্যান্সার লেসিওন
পার্শ্ববর্তী স্কিন টিস্যু ক্ষতি করে আকৃতিতে বড় হতে থাকে এবং শরীরের অন্যত্রও ছড়িয়ে
পরতে পারে । ঘন ঘন সূর্যের আলোয় উন্মুক্ত থাকলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা জাগে । যদিও যাদের
রোগ প্রতিরোধ ব্যাবস্থা অবদমিত অবস্থায় আছে তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন ।
মালিগ্নান্ট মেলানোমা
মালিগ্নান্ট মেলানোমা কম
সাধারণ হলেও খুব বিপদজনক স্কিন ক্যান্সার । প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে মেলানোমার নিরাময়
হার অন্য সব ক্যান্সারের চেয়ে বেশি । শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ । কিন্তু, যদি চিকিৎসা না শুরু করা হয় তবে মেলানোমা স্কিনে ছড়িয়ে পরবে
। যখন এটা রক্তে অথবা লসিকানালী সিস্টেমে ছড়িয়ে পরে তখন এর পক্ষে শরীরের অন্যান্য অংশে
ছড়িয়ে পরা সহজ হয়ে যায় এবং প্রায়শই মৃত্যুর কারণ হয় ।
সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিতে
উন্মুক্ত থাকা এবং সান বেড মেলানোমা হওয়ার প্রধান দুটি কারণ । আর উভয়কেই খুব সহজে প্রতিরোধ
করা যায় । বিশেষজ্ঞদের মতে ৯০ ভাগ মেলানোমার কারণ হচ্ছে জীবনকাল জুড়ে সান বার্ন এবং অতিবেগুনী রশ্মিতে উন্মুক্ত অবস্থায়
থাকা ।
আক্টিনিক কেরাটোসেস
প্রকৃতপক্ষে আক্টিনিক কেরাটোসেস
কোন স্কিন ক্যান্সার নয় । তবু এসব লেসিওনের
চিকিৎসা করা প্রয়োজন । নতুবা পরবর্তীতে এরা স্কোয়ামাস সেল
স্কিন ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে ।
বহু বছর ধরে সূর্যে আলতে
উন্মুক্ত থাকলে চামড়ার স্বাভাবিক কোষ বিভাজন ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এর ফলে চামড়ার উপরের
স্তর আক্রান্ত হয় । যাকে এপিডার্মিস বলে । সূর্য চামড়ার ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে
এবং এরকম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে ।
প্রতিরোধ
সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত
অবস্থায় থাকা পরিহার করতে হবে । এছাড়া অন্যান্য প্রতিরোধ ব্যাবস্থা হচ্ছেঃ
·
সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর
(এসপিএফ) ৩০ বা তার অধিক সান স্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে ।
·
বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে
বিকাল ৪টার মধ্যবর্তী সময়টাতে যখন সূর্য প্রখর থাকে তখন তখন ছায়ায় থাকুন ।
·
রক্ষাকারী কাপড় পড়ুন যেমন,
ফুল হাতা সার্ট, প্যান্ট এবং সানগ্লাসেস ।
·
ট্যানিগ বেড এড়িয়ে চলুন
।
দিন দিন পৃথিবীতে স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর
সংখ্যা বাড়ছে । তবে সৌভাগ্যক্রমে আমাদের কাছে এ রোগের চিকিৎসা রয়েছে এবং তা দিন দিন উন্নতি লাভ করছে । আর এমন
ধরণের ক্যান্সার খুব সহজেই প্রতিরোধমূলক ব্যাবস্থা নেয়ার মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব । ডার্মাটোলজিস্টের
সাথে কথা বলে স্কিন ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ধারণ করা উচিত ।
এর চিকিৎসায় মূলত সার্জারি এবং রেডিয়েশন বেছে নেয়া হয়।
No comments:
Post a Comment