পিটাইরিয়াসিস রোজি বা ফুসকুড়ি তুলনামূলকভাবে সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা যা
সচরাচর শরৎ এবং বসন্তকালে দেখা যায় । কিন্তু বছরের যেকোনো সময় এর দেখা পাওয়া যেতে
পারে । এটি প্রায়শই কনিষ্ঠদের যেমন শিশু এবং বয়ঃসন্ধির সময় দেখা যায় । যদিও যেকোনো
বয়সের মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়া বিরল নয় । এই ফুসকুড়িকে আঁশযুক্ত,
ডিম্বাকৃতির এবং বৃত্তাকার প্যাচ দিয়ে চিহ্নিত করা যায় এবং প্রায়ই গোলাপি রঙের হয়ে
থাকে । সোরাইসিস বা অন্যান্য ফুসকুড়ি যেখানে আইশের আকৃতি বড় হয় তার তুলনায় এর
আইশের পরিমাণ কম এবং সূক্ষ্ম হয় ।
যদিও এটি
ছোঁয়াচে নয় এবং বিশেষ কিছু কারণে পিটারিয়াসিস রোজিকে হেরাল্ড প্যাচ বলা হয় । যার
মানে হচ্ছে রোগী প্রায়ই গোলাপি প্যাচের উপস্থিতি দেখতে পান । এটিই হচ্ছে হেরাল্ড
প্যাচ এবং এক বা দুই সপ্তাহে মধ্যে রোগী আরও অনেক ছোট ছোট প্যাচ বিকশিত হতে দেখতে
পান । যদি আপনি আপনার ত্বকে চিমটি কাটেন তবে একদিকেই ভাজ তৈরি হয় এবং সাধারণত
ডিম্বাকৃতির উলম্ব দিকে এই ভাজ দেখা দেয় ।
পিটিরিয়াসিসের
উপস্থিতি
পিটিরিয়াসিস
রোজি সবচেয়ে বেশী দেখা যায় বপু, হাতের এবং পায়ের
ঊর্ধ্বাংশে, পাশাপাশি অন্যান্য অঞ্চলে আরও বেশী বিক্ষিপ্ত প্যাচের দেখা
পাওয়া যায় । যদিও অন্যান্য ফুসকুড়ির মত বিভিন্ন উপস্থিতির কারণে রোগ নির্ণয় আরও
বেশী কঠিন হয়ে পড়ে । মাঝে মাঝে পিটিরিয়াসিস ফোসকা তৈরি করে, মাঝে মাঝে পারপারা
নামক ফোসকা বিকশিত করে অথবা মাঝে মাঝে বগলের মত বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে গড়ে উঠে । প্রকৃতপক্ষে,
পিটিরিয়াসিস রোজি ফুসকুড়ির শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া সাধারণত চুলকানি সৃষ্টি করে না
বা রোগীর জন্যও বিরক্তিকর নয় । অধিকাংশ মানুষ পিটিরিয়াসিস রোজিতে আক্রান্ত অবস্থায়
ভালই থাকে । তবে কিছু বিরল ঘটনায় জ্বর, মাথা ব্যথা, ব্যথা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে
পারে ।
স্থায়িত্ব
এবং চিকিৎসা
এই ফুসকুড়ি সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঠিক হয়ে যায়
। বিরলক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এমনকি বহু মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । এটি
সেরে যাবার পড়ে যেসব স্থানে ফুসকুড়ি ছিল সেখানে হালকা সাদা এলাকার সৃষ্টি হয়
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই অবস্থারও উন্নতি হয় ।
পিটিরিয়াসিস
এর কারণ আসলে অজ্ঞাত । খুব সম্ভবত এটি ভাইরাল ইনফেকশনের কারণেই হয়ে থাকে । কিন্তু
সঠিক কারণটি আজও অজানা । কোন ধরণের চুলকানি অনুভূত না হওয়ার কারণে প্রায়শই কোন
চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না এবং এটি কোন মূলগত অসুস্থতার ইঙ্গিত করে না । এটি নিজের
মতই ঠিক হয়ে যায় কিন্তু অধিকাংশ সময় ডার্মাটোলজিস্টেরা দ্রুত আরোগ্যের জন্য একটি
কর্টিসন ক্রিম নির্ধারণ করে দেন ।
কোন রকমের
চিহ্ন না রেখেই এই ফুসকুড়ি চলে যায় । তবে গাঢ় গাত্র বর্ণের কিছু মানুষের ক্ষেত্রে
ফুসকুড়ি সেরে যাবার পর আক্রান্ত অঞ্চলে সমতল এবং বাদামী দাগ দেখা দেয় । এই ধরণের
দাগ বহু মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে কিন্তু একসময় তা চলে যায় । অধিকাংশ মানুষের
ক্ষেত্রেই একবার আক্রান্ত হবার পর তাদের মধ্যে আর কখনই পিটিরিয়াসিস রোজির
প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় না ।
No comments:
Post a Comment