Monday 30 January 2017

পিটাইরিয়াসিস রোজি

পিটাইরিয়াসিস রোজি বা ফুসকুড়ি তুলনামূলকভাবে সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা যা সচরাচর শরৎ এবং বসন্তকালে দেখা যায় । কিন্তু বছরের যেকোনো সময় এর দেখা পাওয়া যেতে পারে । এটি প্রায়শই কনিষ্ঠদের যেমন শিশু এবং বয়ঃসন্ধির সময় দেখা যায় । যদিও যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়া বিরল নয় । এই ফুসকুড়িকে আঁশযুক্ত, ডিম্বাকৃতির এবং বৃত্তাকার প্যাচ দিয়ে চিহ্নিত করা যায় এবং প্রায়ই গোলাপি রঙের হয়ে থাকে । সোরাইসিস বা অন্যান্য ফুসকুড়ি যেখানে আইশের আকৃতি বড় হয় তার তুলনায় এর আইশের পরিমাণ কম এবং সূক্ষ্ম হয় । 
যদিও এটি ছোঁয়াচে নয় এবং বিশেষ কিছু কারণে পিটারিয়াসিস রোজিকে হেরাল্ড প্যাচ বলা হয় । যার মানে হচ্ছে রোগী প্রায়ই গোলাপি প্যাচের উপস্থিতি দেখতে পান । এটিই হচ্ছে হেরাল্ড প্যাচ এবং এক বা দুই সপ্তাহে মধ্যে রোগী আরও অনেক ছোট ছোট প্যাচ বিকশিত হতে দেখতে পান । যদি আপনি আপনার ত্বকে চিমটি কাটেন তবে একদিকেই ভাজ তৈরি হয় এবং সাধারণত ডিম্বাকৃতির উলম্ব দিকে এই ভাজ দেখা দেয় ।  
পিটিরিয়াসিসের উপস্থিতি


পিটিরিয়াসিস রোজি সবচেয়ে বেশী দেখা যায় বপু, হাতের এবং পায়ের  ঊর্ধ্বাংশে, পাশাপাশি অন্যান্য অঞ্চলে আরও বেশী বিক্ষিপ্ত প্যাচের দেখা পাওয়া যায় । যদিও অন্যান্য ফুসকুড়ির মত বিভিন্ন উপস্থিতির কারণে রোগ নির্ণয় আরও বেশী কঠিন হয়ে পড়ে । মাঝে মাঝে পিটিরিয়াসিস ফোসকা তৈরি করে, মাঝে মাঝে পারপারা নামক ফোসকা বিকশিত করে অথবা মাঝে মাঝে বগলের মত বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে গড়ে উঠে । প্রকৃতপক্ষে, পিটিরিয়াসিস রোজি ফুসকুড়ির শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া সাধারণত চুলকানি সৃষ্টি করে না বা রোগীর জন্যও বিরক্তিকর নয় । অধিকাংশ মানুষ পিটিরিয়াসিস রোজিতে আক্রান্ত অবস্থায় ভালই থাকে । তবে কিছু বিরল ঘটনায় জ্বর, মাথা ব্যথা, ব্যথা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে । 
স্থায়িত্ব এবং চিকিৎসা

এই ফুসকুড়ি সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঠিক হয়ে যায় । বিরলক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এমনকি বহু মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । এটি সেরে যাবার পড়ে যেসব স্থানে ফুসকুড়ি ছিল সেখানে হালকা সাদা এলাকার সৃষ্টি হয় কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই অবস্থারও উন্নতি হয় ।
পিটিরিয়াসিস এর কারণ আসলে অজ্ঞাত । খুব সম্ভবত এটি ভাইরাল ইনফেকশনের কারণেই হয়ে থাকে । কিন্তু সঠিক কারণটি আজও অজানা । কোন ধরণের চুলকানি অনুভূত না হওয়ার কারণে প্রায়শই কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না এবং এটি কোন মূলগত অসুস্থতার ইঙ্গিত করে না । এটি নিজের মতই ঠিক হয়ে যায় কিন্তু অধিকাংশ সময় ডার্মাটোলজিস্টেরা দ্রুত আরোগ্যের জন্য একটি কর্টিসন ক্রিম নির্ধারণ করে দেন ।

কোন রকমের চিহ্ন না রেখেই এই ফুসকুড়ি চলে যায় । তবে গাঢ় গাত্র বর্ণের কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ফুসকুড়ি সেরে যাবার পর আক্রান্ত অঞ্চলে সমতল এবং বাদামী দাগ দেখা দেয় । এই ধরণের দাগ বহু মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে কিন্তু একসময় তা চলে যায় । অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই একবার আক্রান্ত হবার পর তাদের মধ্যে আর কখনই পিটিরিয়াসিস রোজির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় না ।


No comments:

Post a Comment