Saturday 31 December 2016

শুষ্ক ত্বক



শুষ্ক ত্বকের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার মূলত তা দেখতে কেমন তা নয়, বরং তা কেমন অনুভব হচ্ছে সেটাই মুখ্য শুষ্ক ত্বকের কারণে মুখের ত্বক আদ্র করার আগ পর্যন্ত তা টানটান অনুভব হতে থাকে । খুব শুষ্ক ত্বক হলে মাঝে মাঝে ময়েসচারাইজার ব্যবহারের সময় সূচ বা পিনের আঘাতের মত লাগতে পারে । বিশেষ করে শীতকালে মুখ ধোয়ার পর ত্বক আরও বেশি টানটান ও ফ্লেকি হয়ে যায় । আর তার সাথে বেমানান ও নিস্তেজ রূপ ধারণ করে । ময়েসচারাইজার ব্যবহার বন্ধ করে দিলে কিছু কিছু সময় সূক্ষ্ম লাইন দেখা যায়, লালচেভাব এবং চুলকানি দেখা দিতে পারে । তবে শুষ্ক ত্বকের ধরণের কারণে ব্রণ, ব্ল্যাক/হোয়াইট হেড এবং ওপেন পোর আপনার জন্য খুব একটা সমস্যা কারণ হয় না ।
ত্বক এবং আবহাওয়া
§  আদ্র আবহাওয়ায় ত্বকের শুষ্কতা যদিও কমে যায় । তবুও ময়েসচারাইজার ব্যবহার ছাড়া আপনি এক বা দুই দিনের বেশি থাকতে পারবেন না ।
§  শুষ্ক আবহাওয়ায় আপনার ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হয়ে যাবে । তার ফলে ত্বক অনেক বেশি টানটান এবং শুকিয়ে হয়ে যাবে যে ময়েসচারাইজার ছাড়া আপনি একদিনও থাকতে পারবেন না । এমনকি দিনে বেশ কয়েকবার আপনাকে ময়েসচারাইজার ব্যবহার করতে হতে পারে ।


শুষ্ক ত্বক হয়তোবা দেখতে খারাপ লাগে না , কিন্তু ত্বকের টানটানভাবের সঠিক পরিচর্যা নেওয়া জরুরী । আর তার জন্য ময়েসচারাইজার হচ্ছে সবচেয়ে ভাল সমাধান । কিন্তু ময়েচারাইজারের পাশাপাশি এমন একটি ফেস ওয়াস ব্যবহার করা উচিত যা ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজিং ফ্যাক্টরগুলিকে নষ্ট করে না ।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখে ত্বকের যত্নের জন্য সক্রিয় উপাদান বেছে নিতে পারেনঃ
§  সংবেদনশীলতাঃ সংবেদনশীল ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে আঘাত ও বিচারের পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে সেসব সক্রিয় উপাদানসমূহদের এড়িয়ে চলা উচিত যারা ব্রেকাউট শুরু করতে পারে । আর একি প্রক্রিয়ায় যেসব উপাদান উপশম করে তাদের বেছে নিতে হবে ।
§  পিগমেন্টেশনঃ যদি পিগমেন্টেশনের সমস্যাও থাকে তবে রাতে ত্বকের রঙ হালকাকারী ক্রিম এবং দিনে  সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে ।
§  বার্ধক্যঃ আপনার বয়স ত্রিশের অধিক হলে সাধারণ সানস্ক্রিন হিসেবে এবং রাতে ময়েসচারাইজার হিসেবে অ্যান্টিএজিং সলিউসন ব্যবহার করা উচিত ।
ফেস ওয়াস
শুষ্ক ত্বকে তার প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজার ফ্যাক্টর এমনিতেও হ্রাসপ্রাপ্ত অবস্থায় থাকে । তাই ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েসচারাইজার ফ্যাক্টর আরও কমিয়ে দেয় না এমন ফেস ওয়াস বেছে নেওয়াটা জরুরী । যেসব ক্রিমি ক্লিনজার যারা খুব বেশি ফেনা তৈরি করে না সেসবই বেছে নেওয়া উচিত । ফেস ওয়াসের লেবেলে “সোপ ফ্রি” বা “নন-ফোমিং” লেখা দেখে নিন । এতে বোঝা যায় যে সেই ফেস ওয়াসে ত্বকের সারফেস টেনশন বিনষ্টকারী উপাদান নেই ।
বেসিক ভার্সনগুলোই বেছে নিন । সালিসাইলিক এসিড, নিম এবং টি-ট্রি ওয়েল উপাদান সমৃদ্ধ ফেস ওয়াস পরিহার করুন। কারণ তা আপনার শুষ্ক ত্বকে বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে । দিনে অন্তত দুই বার মুখ পরিষ্কার করুন । মুখ ধোয়ার পর সব সময় মুখ শুকনা তয়ালে দিয়ে আলত করে মুছে ফেলুন এবং মুখ হালকা ভেজা অবস্থাতেই রেখে দিন । আর মুখে থেকে যাওয়া পানি ধরে রাখতে সাথে সাথেই ক্রিম মেখে ফেলুন ।
সানস্ক্রিন ব্যবহারে মাধ্যমে দিনের বেলার ময়েসচারাইজার
স্কিন কেয়ার রুটিনের মধ্যে সানস্ক্রিন ব্যবহার অতি গুরুত্বপূর্ণ । সানস্ক্রিন ব্যবহারের ফলে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনীরশ্মি প্রতিহত করা যায় । এ সম্পর্কিত কিছু টিপসঃ
§  এসপিএফ নাম্বার যত বেশি সানস্ক্রিন তত বেশি তৈলাক্ত । তাই বাইরে যাওয়ার ১৫-৩০ মিনিট  আগে এসপিএফ ৩০+ সানস্ক্রিন মুখে মেখে নিন ।
§  সানস্ক্রিনের বোতলের গায়ে “জেন্টল/ফর সেনসিটিভ স্কিন/হাইপো অ্যালারজিক”  দেখে নিন । কারণ তার ফলেই আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে সেই সানস্ক্রিন আপনার ত্বকের জন্য বিরক্তির কারণ হবে কি না ।
রাতের ময়েসচারাইজার
রাত হচ্ছে সে সময় যখন আপনি সারা দিনে ত্বকে সৃষ্ট শুষ্কতা কমানোর জন্য পুরু ময়েসচারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন । এ সময় পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন ক্ষতিকর বস্তু যেমন ধুলাময়লা, বাতাস, সূর্যের আলো এবং দূষণের প্রভাব ছাড়াই ময়েসচারাইজার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে ।
রাতের জন্য স্কিন লাইটনিং, অ্যান্টি-এজিং অথবা যেকোনো ময়েসচারাইজারই ব্যবহার করে থাকেন না কেন, নিশ্চিত হন যে তা একটি ক্রিম বেস । ব্যাপারটাকে আরেকটু ব্যাক্ষা করা যাক । ময়েসচারাইজার যত বেশি পুরু তার ময়েসচারাইজিং ক্ষমতা তত বেশি । 
রাতের ময়েচারাইজারের সক্রিয় উপাদান বেছে নেবার ক্ষেত্রে ত্বকের ধরণই হচ্ছে মুখ্য । তাই যদি ত্বক সংবেদনশীল হয় তবে যখন ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে তখন স্কিন লাইটনিং দিয়ে শুরু করে অ্যান্টি-এজিং দিয়ে ময়েসচারাইজিং প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে । যখনি স্কিন ব্রেকাউট শুরু হবে তখনি সেনসিটিভ স্কিন কেয়ার রেজিমে ফিরে যেতে হবে । তারপর স্কিন লাইটনিং রেজিম এবং প্রয়োজন মত অ্যান্টি-এজিং রেজিমে ফিরে যেতে হবে ।
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বকে ডেড সেলের পরিমাণ বাড়তে থাকে । তার সাথে সাথে ত্বক মলিন ও বেমানান রূপ ধারণ করে । এমন পরিস্থিতি এড়াতে স্ক্রাবিং গুরুত্বপূর্ণ । এক্ষেত্রে বাড়িতেই স্ক্রাব করতে পারেন । তবে প্রতিদিন ব্যবহার করার মত মাইল্ড স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে । কারণ শুষ্ক তবে রেগুলার স্ক্রাবার সমস্যা করতে পারে ।

No comments:

Post a Comment