Tuesday 2 May 2017

কপালের বলিরেখার প্রতিরোধ


এমন কেউ আসলে নেই যে বলি রেখা পছন্দ করেন । কারণ বলি রেখা ত্বকের চেহারা নষ্ট করে দেয় । সাধারণত চল্লিশের শুরুর দিক থেকে বলিরেখা দৃশ্যমান হয়ে থাকে । কিন্তু কেউ যদি জীবনের বিশের দশকে বা ত্রিশের দশকের মধ্যেই বলিরেখায় আক্রান্ত হন তবে তা স্বাভাবিক নয় এবং এই বলিরেখার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত ।
যারা খুব দ্রুত কপালের বলিরেখা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তাদের জন্য সাধারণ পরামর্শ হচ্ছে বোটক্স ব্যবহার করা ।  কিন্তু বোটক্স ব্যবহারের কিছু নেতিবাচক দিক আছে । কারণ, এটি খুব ব্যয়বহুল এবং এই সমধান স্থায়ী নয় । এর প্রভাব ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় । তাই আপনার কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করার পূর্বে সচেতনতার সাথে সিদ্ধান্ত নিন । সৌভাগ্যবশত, এমন বহু ঘরোয়া প্রাকৃতিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা রয়েছে যা কিনা বলিরেখা চিকিৎসায় বেশ কার্যকর এবং তা স্বাস্থ্যবান ত্বক পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে । ত্বকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব সময় এটা খেয়াল রাখতে হবে যে প্রাকৃতিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা সব ক্ষেত্রে উত্তম । কারণ, এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে কখনই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবতে হয় না ।

কপালের বলিরেখার কারণ
কপালের বলিরেখা বা অকাল বার্ধক্য বিভিন্ন কারণে দৃশ্যমান হতে পারে । মূল কারণসমূহ নিম্নরুপঃ
·             বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া
·             সরাসরি সূর্যালোকের উন্মুক্ততা
·             রাগ, চাপ, দুশ্চিন্তা
·             অনুচিত খাদ্যাভ্যাস (আমিষের অভাব, শর্করার আধিক্য )
·             বংশগতি
·             ঘুমের অভাব
·             অ্যালকোহল গ্রহণ
·             ধূমপান
·             বিষণ্ণতা
কপালের বলিরেখার প্রতিরোধ
অপ্রাপ্ত বয়সে কপালের বলিরেখা দেখা দিলে তার প্রতিরোধ সম্ভব । কিন্তু আপনি বার্ধক্য এবং বার্ধক্য সংক্রান্ত উপসর্গগুলি প্রতিরোধ করতে পারবেন না । কিন্তু আপনি দ্রুত বার্ধক্য বরণ করবেন না চারুতার সাথে বার্ধক্য বরণ করেবেন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন । জীবনধারায় কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমেই আপনি তা করতে পারেন । 
কপালের বলিরেখা থেকে পরিত্রাণের উপায়
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
এর জন্য আপনার প্রয়োজন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল । আপনি এর সাথে বারতি পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে কয়েক ফোঁটা নারিকেলের তেল যোগ করে নিতে পারেন ।
উষ্ণ অলিভ অয়েল আলতোভাবে কপালে বৃত্তাকার পথে ম্যাসেজ করুন ।
এভাবে ৫-১০ মিনিট ম্যাসেজ করুন ।.

.
পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার
            রাতে মুখ ধোয়ার পর কপালে হালকা করে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে নিন । নিয়মিত এটি করুন ।
           শীঘ্রই দেখবেন যে কপাল থেকে বলিরেখা মুছে যাওয়া শুরু করেছে ।


বলিরেখানাশক ক্রিম
কপালের বলিরেখা কমাতে আপনি বলিরেখানাশক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন । আজকাল বাজারে বহু বলিরেখানাশক ক্রিম পাওয়া যায় । তাই এমন বাণিজ্যিক পণ্য ব্যবহারের পূর্বে সঠিক অনুসন্ধান এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন । সর্বোত্তম ফলাফলের এবং উপযুক্ত পরামর্শের জন্য একজন ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হন । একজন ডার্মাটোলজিস্ট আপনার ত্বকের জন্য সঠিক বলিরেখানাশক ক্রিম বেছে নিতে সাহায্য করতে পারেন ।
বোটক্স
বোটুলিনাম এ বা বোটক্স বলিরেখার নিম্নাবস্থিত পেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে । যার ফলে উপরের ত্বক আর কুচকে যায় না এবং এর ফলে ত্বক আবার স্বাস্থ্যকর রূপ ফিরে পায় । যদিও, এর প্রভাব ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় । তাই বলিরেখা মুক্ত কপালের জন্য আপনাকে নিয়মিত বোটক্স ব্যবহার করতে হবে ।
রেটিন-এ
 রেটিন-এ হচ্ছে রেটিনয়েড শ্রেণিভুক্ত একটি সাময়িক ব্যবহারযোগ্য ক্রিম । ব্রন, ফটোড্যামেজ এবং বলিরেখা/বার্ধক্য প্রতিরোধে ডার্মাটোলজিস্টেরা এটি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন । বাজারের অন্যান্য সকল বলিরেখানাশক ক্রিমের মধ্যে রেটিন-এ এর কার্যকারিতার হার সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে । যদিও, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া উপকারিতা লাভের জন্য সঠিক উপায়ে এর ব্যবহার জানা প্রয়োজন ।.
সুষম খাদ্য
পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন, খনিজ, শর্করা, আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করুন । প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, মাছ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন । প্রত্যেক বেলায় খাবার সময় সালাদ খান । বলিরেখার হাত থেকে মুক্ত হতে বিশেষ করে ভিটামিন এ, ডি এবং ই সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন ।


ধূমপান ত্যাগ করুন
হঠাৎ করে ধূমপান ত্যাগ করা কষ্টকর । কিন্তু আপনার স্বাস্থ্য এবং বলিরেখার চিকিৎসার জন্য ধূমপান ত্যাগ বাঞ্ছনীয় ।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান
দেহ এবং ত্বক হাইড্রেট অবস্থায় রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন । বয়সের বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বক ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে । পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানের ফলে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে ।
 দুশ্চিন্তা এবং চাপ এড়িয়ে চলুন

কপালের বলিরেখার প্রধান কারণ হিসেবে চাপ এবং দুশ্চিন্তাকেই চিহ্নিত করা হয় । তাই আপনার শারীরিক এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যর জন্য দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে হবে । চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমাতে যোগ ব্যায়াম বা মেডিটেশনের জন্য সময় খুঁজে বের করুন ।

No comments:

Post a Comment