এমন কেউ আসলে নেই যে বলি রেখা পছন্দ করেন । কারণ বলি রেখা ত্বকের চেহারা নষ্ট
করে দেয় । সাধারণত চল্লিশের শুরুর দিক থেকে বলিরেখা দৃশ্যমান হয়ে থাকে । কিন্তু
কেউ যদি জীবনের বিশের দশকে বা ত্রিশের দশকের মধ্যেই বলিরেখায় আক্রান্ত হন তবে তা
স্বাভাবিক নয় এবং এই বলিরেখার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত
।
যারা খুব দ্রুত কপালের বলিরেখা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তাদের জন্য সাধারণ
পরামর্শ হচ্ছে বোটক্স ব্যবহার করা ।
কিন্তু বোটক্স ব্যবহারের কিছু নেতিবাচক দিক আছে । কারণ, এটি খুব ব্যয়বহুল
এবং এই সমধান স্থায়ী নয় । এর প্রভাব ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় । তাই আপনার
কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করার পূর্বে সচেতনতার সাথে সিদ্ধান্ত নিন । সৌভাগ্যবশত, এমন
বহু ঘরোয়া প্রাকৃতিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা রয়েছে যা কিনা বলিরেখা চিকিৎসায় বেশ
কার্যকর এবং তা স্বাস্থ্যবান ত্বক পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে । ত্বকের চিকিৎসার
ক্ষেত্রে সব সময় এটা খেয়াল রাখতে হবে যে প্রাকৃতিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা সব
ক্ষেত্রে উত্তম । কারণ, এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে কখনই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবতে
হয় না ।
কপালের বলিরেখার কারণ
কপালের বলিরেখা বা অকাল বার্ধক্য বিভিন্ন কারণে দৃশ্যমান হতে পারে । মূল
কারণসমূহ নিম্নরুপঃ
·
বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া
·
সরাসরি সূর্যালোকের উন্মুক্ততা
·
রাগ, চাপ, দুশ্চিন্তা
·
অনুচিত খাদ্যাভ্যাস (আমিষের অভাব, শর্করার
আধিক্য )
·
বংশগতি
·
ঘুমের অভাব
·
অ্যালকোহল গ্রহণ
·
ধূমপান
·
বিষণ্ণতা
কপালের বলিরেখার প্রতিরোধ
অপ্রাপ্ত বয়সে কপালের বলিরেখা দেখা দিলে তার প্রতিরোধ সম্ভব । কিন্তু আপনি
বার্ধক্য এবং বার্ধক্য সংক্রান্ত উপসর্গগুলি প্রতিরোধ করতে পারবেন না । কিন্তু
আপনি দ্রুত বার্ধক্য বরণ করবেন না চারুতার সাথে বার্ধক্য বরণ করেবেন সে ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন । জীবনধারায় কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমেই আপনি তা করতে পারেন
।
কপালের বলিরেখা থেকে পরিত্রাণের উপায়
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
• এর জন্য আপনার প্রয়োজন এক্সট্রা ভার্জিন
অলিভ অয়েল । আপনি এর সাথে বারতি পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে কয়েক ফোঁটা নারিকেলের তেল
যোগ করে নিতে পারেন ।
• উষ্ণ অলিভ অয়েল আলতোভাবে কপালে বৃত্তাকার পথে ম্যাসেজ করুন ।
• এভাবে ৫-১০ মিনিট ম্যাসেজ করুন ।.
.
পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার
• রাতে মুখ ধোয়ার পর কপালে
হালকা করে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে নিন । নিয়মিত এটি করুন ।
• শীঘ্রই দেখবেন যে কপাল
থেকে বলিরেখা মুছে যাওয়া শুরু করেছে ।
বলিরেখানাশক ক্রিম
কপালের বলিরেখা কমাতে আপনি বলিরেখানাশক
ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন । আজকাল বাজারে বহু বলিরেখানাশক ক্রিম পাওয়া যায় । তাই
এমন বাণিজ্যিক পণ্য ব্যবহারের পূর্বে সঠিক অনুসন্ধান এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া
প্রয়োজন । সর্বোত্তম ফলাফলের এবং উপযুক্ত পরামর্শের জন্য একজন ডার্মাটোলজিস্টের
শরণাপন্ন হন । একজন ডার্মাটোলজিস্ট আপনার ত্বকের জন্য সঠিক বলিরেখানাশক ক্রিম বেছে
নিতে সাহায্য করতে পারেন ।
বোটক্স
বোটুলিনাম এ বা বোটক্স বলিরেখার
নিম্নাবস্থিত পেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে । যার ফলে উপরের ত্বক আর কুচকে যায় না
এবং এর ফলে ত্বক আবার স্বাস্থ্যকর রূপ ফিরে পায় । যদিও, এর প্রভাব ৩ থেকে ৪ মাস
পর্যন্ত স্থায়ী হয় । তাই বলিরেখা মুক্ত কপালের জন্য আপনাকে নিয়মিত বোটক্স ব্যবহার
করতে হবে ।
রেটিন-এ
রেটিন-এ হচ্ছে রেটিনয়েড শ্রেণিভুক্ত একটি সাময়িক ব্যবহারযোগ্য ক্রিম । ব্রন,
ফটোড্যামেজ এবং বলিরেখা/বার্ধক্য প্রতিরোধে ডার্মাটোলজিস্টেরা এটি ব্যবহারের
পরামর্শ দিয়ে থাকেন । বাজারের অন্যান্য সকল বলিরেখানাশক ক্রিমের মধ্যে রেটিন-এ এর
কার্যকারিতার হার সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে । যদিও, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া
উপকারিতা লাভের জন্য সঠিক উপায়ে এর ব্যবহার জানা প্রয়োজন ।.
সুষম খাদ্য
পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন, খনিজ, শর্করা,
আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করুন । প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল,
মাছ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন । প্রত্যেক বেলায় খাবার সময় সালাদ খান ।
বলিরেখার হাত থেকে মুক্ত হতে বিশেষ করে ভিটামিন এ, ডি এবং ই সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ
করুন ।
ধূমপান ত্যাগ করুন
হঠাৎ করে ধূমপান ত্যাগ করা কষ্টকর । কিন্তু আপনার স্বাস্থ্য এবং বলিরেখার
চিকিৎসার জন্য ধূমপান ত্যাগ বাঞ্ছনীয় ।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান
দেহ এবং ত্বক হাইড্রেট অবস্থায় রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন । বয়সের
বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বক ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে । পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানের
ফলে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে ।
দুশ্চিন্তা এবং চাপ এড়িয়ে
চলুন
কপালের বলিরেখার প্রধান কারণ হিসেবে চাপ
এবং দুশ্চিন্তাকেই চিহ্নিত করা হয় । তাই আপনার শারীরিক এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যর
জন্য দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে হবে । চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমাতে যোগ ব্যায়াম বা
মেডিটেশনের জন্য সময় খুঁজে বের করুন ।
No comments:
Post a Comment