Monday 22 May 2017

একজিমা

একজিমা খুবই বিরক্তিকর এবং অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ত্বকের অবস্থা । একজিমা হলে ত্বক উদ্দীপ্ত হয়ে যায় এবং প্রদাহ সৃষ্টি হয় । যার ফলে বিরক্তিভাব অথবা ফুসকুড়ি দেখা দেয় । বিরক্তিভাব এবং ফুসকুড়ি বিস্তৃত হতে পারে অথবা শরীরের বিশেষ কিছু অংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে । সবচেয়ে বেশি সাধারণ একজিমা হচ্ছে এটোপিক ডার্মাটিটিস । যা কিনা দীর্ঘস্থায়ী হিসেবে গণ্য করা হয় । একজিমার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের কথা কষ্টসাধ্য । বেশিরভাগক্ষেত্রে তা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া । ব্যাকটেরিয়াও একজিমা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে । ব্যাকটেরিয়া ত্বকের উপরে হালকা এক ধরণের প্রলেপ সৃষ্টি করে যার ফলে ঘাম গ্রন্থি অবরুদ্ধ হয় । একজিমার মত ত্বকের অবস্থা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দেখা গেলেও ছোঁয়াচে কোন রোগ নয় । এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চুলকানিযুক্ত ত্বক এবং মুখ,হাত,পা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি ।
প্রতিরোধ
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে একজিমার প্রাদুর্ভাব এবং লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব । এক্ষেত্রে গোসল করার সময়কাল ১৫ মিনিটের উর্ধে যাতে না যায় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে । তাছাড়া গোসলের সময় মৃদু ধরণের সাবান ব্যবহার করতে হবে যাতে আপানার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল সুরক্ষিত থাকে । ত্বকের ময়েসচারের মাত্রা রক্ষা করতে হবে । তাই আপনার ত্বকের জন্য  উপযুক্ত ময়েসচারাইজার লোশন বা ক্রিম বেছে নিন । ময়েসচারাইজার বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল করুন যাতে তাতে ভেষজ গুণসম্পন্ন উপাদান আছে কিনা ।  


চিকিৎসা
প্রদাহ দূর করতে এবং উপসর্গসমূহ হ্রাস করতে বহু ধরণের চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে । স্টের‍য়েড ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদাহ এবং চুলকানি নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব । স্টেরয়েড ক্রিম বেশ কার্যকর এবং ত্বকে শান্তিকর আবহ বিস্তারে সাহায্য করে । যদি অতিরিক্ত চুলকানির ফলে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হয় বা ইনফেকশন দেখা দেয় তবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে । আর একজিমার অবস্থা যদি খুব তীব্র হলে ইমুইনোসাপ্রেসান্ট মেডিকেশন নিতে হতে পারে । এসব ক্ষেত্রে একজন ডার্মাটোলজিস্ট আপনাকে বহুভাবে সাহায্য করতে পারেন । ডার্মাটোলজিস্টের সাথে ব্যবহারযোগ্য চিকিৎসাসমূহের ব্যাপারে আলোচনা করে নেয়া উচিত ।

শিশুর একজিমার ক্ষেত্রে করনীয়
·        এক্ষেত্রে ময়েসচারাইজারের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ । অয়েনমেন্ট বা ক্রিমের ব্যবহার কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে ।
·        দিনে অন্তত দুই বার ময়েসচারাইজার ব্যবহার করুন ।
·        ১% হাইড্রোকরটিজন অয়েনমেন্ট ব্যবহারে সুফল পাওয়া যাবে ।
·        প্রেসক্রিপশনের বাইরের কোন ওষুধ ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিন ।


একজন অভিজ্ঞ ডার্মাটলজিস্ট আপনার একজিমার চিকিৎসার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন । আপনি যদি এমন কোন ত্বকের অবস্থার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তবে সময় নষ্ট করবেন না বা নিজে থেকে সুস্থ হবার জন্য অপেক্ষা করবেন না । কারণ তা কখনোই হবে না । তাই অধিক তথ্য এবং পরামর্শের জন্য ডার্মাটলজিস্টের শরণাপন্ন হন । 

No comments:

Post a Comment