Friday 12 May 2017

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি হচ্ছে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান যা কিনা ত্বকের নানা ধরনের উপকারে এসে থাকে । ভিটামিন সি এর বহু বৈজ্ঞানিক উপকারিতা রয়েছে । প্রথমে ভিটামিন সি এর রসায়নটা জেনে নেয়া প্রয়োজন । ভিটামিন সি-কে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড বলা হয়ে থাকে । এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক মলিকিউলার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত । অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিএনএ এবং প্রোটিনের মত মলিকিউলের বিভিন্ন উপরকারে আসে । সূর্যের আলো, দূষণ, ধূমপান সহ আরও অনেক কারনে ডিএনএ বা প্রোটিনে ঘটে যাওয়া ক্ষতি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেনের ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে । তার ফলে আপনার ত্বক আরও বেশি স্বাস্থ্যবান এবং তারুণ্যদীপ্ত দেখায় । তাছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন সি কোষের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে ।
পিগমেন্টেশন কমায়
অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন সি ) ত্বকে সৃষ্ট বাদামি ছোপ ছোপ দাগ হালকা করতে সাহায্য করে । মুলত মেলানিন ত্বকের পিগমেন্টেশনের জন্য দায়ী । এই মেলানিন হচ্ছে এক ধনের বাদামী মলিকিউল যা কিনা ত্বকের রঙ সৃষ্টি করে । অ্যাসকরবিক অ্যাসিড পিগমেন্টেশনের দৃষ্টিগোচরতা কমায় । মলিকিউলার স্তরে এটি দুইভাবে হয়ে থাকে । গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন সি শরীর এবং মুখের বাদামী দাগের দৃষ্টিগোচরতা কমায় । তাই, এটি বার্ধক্যজনিত দাগও কমাতে কাজ করে । 
সান ড্যামেজ থেকে আরোগ্য

অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ব্যবহারকারীদের মধ্যে করা গবেষণায় সুক্ষ লাইন এবং বলিরেখা কমতে দেখা গেছে। প্রায়শই ত্বকের জন্য ব্যবহার্য ভিটামিন সি পণ্যের সমর্থনে এসব রিপোর্ট উল্লেখ করা হয় । তাই, সূর্যের তীব্র আলোর ফলে সৃষ্ট সুক্ষ লাইন এবং বলিরেখা থেকে আরোগ্য লাভের জন্য ভিটামিন সি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ।
তাছাড়া, বিদ্যমান কাল দাগ অপসারণেও ভিটামিন সি কার্যকরী ভূমিকা রাখে । এটি দাগ সৃষ্টিকারী এনজাইমসমূহের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং বিদ্যমান বিবর্ণতাও রোধ করে । যদিও, এটি ক্ষত এবং দাগ অপসারণে হাইড্রোকুইনিন বা রেটিন-এ এর মত ভাল কাজ করে না । তারপর আপনার সার্বিক স্বাস্থ্যবান ত্বক লাভে কার্যকর ভূমিকা রাখে ।
কিভাবে ত্বকে ভিটামিন সি পৌঁছে দেয়া যায়?
সাধারণত, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বা শাকসবজি পর্যাপ্ত পরিমানে খেলে বা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি লাভবান হতে পারেন । কিন্তু প্রক্রিতপক্ষে এই প্রক্রিয়া খুব সরল নয় । বরং খুব জটিল । মূল বাঁধাটা হচ্ছে ভিটামিন সি এর ত্বকে পৌঁছান । বিভিন্ন উপায়ে ভিটামিন সি ত্বকে পৌঁছে দেয়া যায় । এর মধ্যে কিছু হচ্ছে ফ্যাট সলিউবল (চর্বিতে দ্রবণীয়) এবং কিছু ওয়াটার সলিউবল (পানিতে দ্রবণীয়) । মূলত লিপিড (এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড) এবং জলীয় স্তর দিয়ে ত্বক গঠিত । তাই, এমন পণ্য বেছে নেয়া উচিত যাতে ফ্যাট এবং ওয়াটার সলিউবল উভয়ই আছে । এমন পণ্য বেছে নিলে তা ত্বক দ্বারা শোষিত হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় । তাই উভয় ধরণের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহার করলে তা কার্যকরীভাবে ত্বকে প্রবেশ করে র‍্যাডিকালসমূহ এবং কোলাজেনকে সাহায্য করতে পারে । পণ্যের গায়ে উপাদানের তালিকা সাবধানে খেয়াল করুন । নিম্নলিখিত উপাদানগুলো তাতে আছে কিনা খেয়াল করুনঃ
·         অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
·         সোডিয়াম অ্যাসকরবাইল ফসফেট
·         অ্যাসকরবাইল পালমিটেট
·         ট্রেট্রাহেক্সাইলডেসাইল অ্যাসকরবেট

আপনার ত্বকের জন্য সর্বোত্তম ভিটামিন সি পণ্য বেছে নিতে একজন ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হন । একই সাথে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পণ্য সংরক্ষনে সাবধানী হওয়া প্রয়োজন । কেননা, ভিটামিন সি সূর্যের আলো এবং বায়ুতে প্রতিক্রিয়াশীল । তাই আপনার ভিটামিন সি পণ্য অবশ্যই ওপেক টিউব, বায়ুরোধী বোতলে সংরক্ষিত রাখা প্রয়োজন যাতে একবার খোলার পরেও তার উপাদান সমূহ কার্যকর থাকতে পারে । সবশেষে, ভিটামিন সি এর খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উদাহরণ বিরল । তারপরও আপনি যদি একজিমার মত কোন ত্বকের অবস্থার সম্মুখীন হন তবে একজন ডার্মাটোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন ।


No comments:

Post a Comment